ডনেলসনের সেসিস জেনারেল স্টোর ও গ্যাস স্টেশনের সামনে দেখা হয় পঁচিশ বছর বয়সী ডাস্টিন এন্ড্রিউয়ের সঙ্গে।
“এখান থেকে মাত্র ৫ মাইল দূরে থাকি আমি। এখানে আসা যাওয়া তেমন কঠিন নয়”।
বহু ছোট শহরের মতো ডনেলসন একটি খামার শহর। ডাউনটাউনে কয়েকটি দোকান আছে। সন্ধ্যার পর বা সাপ্তাহিক ছুটির দিন কিছুই খোলা থাকে না। শহরের শেষদিকের কনভেনিয়েন্স ষ্টোরটির কথা আলাদা। গ্রামীণ অঞ্চলের এরকম শহরগুলো এক সময় কৃষি কারখানা ও খামার জতীয় ব্যাবসায় জমজমাট ছিল। এখন কৃষি কাজ কমে গেছে।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিশেষ করে রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নতির কারনে মানুষ গাড়ী চালিয়ে দূরে গিয়ে কেনাকাটা করতে পারে। ওয়ালমার্টের মতো বড় বড় স্টোরে গিয়ে কেনাকাটা করে। এতে করে তারা পন্যের নানা প্রকারভেদ থেকে বেছে নিতে যেমন পারে তেমনি দামেরও তুলনা করতে পারে।
এন্ড্রিউ ফোর্ট ম্যাডিসনে সিমেন্সের কারখানায় ফুল টাইম কর্মী হিসাবে কাজ করে। তবে বসবাস করে শহরের বাইরে। এটা তার পছন্দ। “আমি একটু নিরালা পছন্দ করি। ইচ্ছা করলে নিজের মতো কৃষি কাজ করতে পারি”।
হাইস্কুল পাশ করার পর সে ফার্ম অঞ্চলে বড় হওয়া অন্যান্যদের মতোই সমস্যায় পড়ে। জমি আছে কিন্তু আধুনিক যন্ত্রপাতি ও শ্রমিক লাগে খামারের কাজে ভালো করতে।
আইওয়ার সিমেন্সের কারখানায় উইন্ড জেনারেটরের ব্লেড তৈরী হয়। কর্মী সংখ্যা প্রায় ৭০০। ঘন্টায় ২০ ডলারের মতো বেতন তাদের। হাইস্কুল পাশ করার পর পরই এন্ড্রিউ এখানে কাজ শুরু করে। কিন্তু পাশাপাশি চালিয়ে যায় তার পারিবারিক কৃষিকাজ। তার কৃষক চাচাতো ভাইয়েরর সঙ্গে অনেকটা স্বেচ্ছাসেবীর মতো কাজ করতো। ফোর্ট ম্যাডিসনে একটি জমি লিজ নিয়ে ২০টি এ্যাংগুজ ও গরু এবং একটি ষাঢ় দিয়ে খামার করে।
“গরুর বাচ্চাগুলোকে বড় করে মোটামুটি সাড়ে তিনশো কেজি ওজন হওয়ার পর বিক্রি করি। কিছু রেখে দেই। আমি আমার দাদার কাছে গরুর প্রজনন ভালো করে শিখেছিলাম।”
এন্ড্রিউ এবং তার মতো অনেক তরুণ কৃষককে আশা ছেড়ে দিতে হয়েছে। কারন অর্থনীতি তাদের ওই পেশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ন নয়। জমির দাম বেশী, এবং আধুনিক কৃষি পদ্ধতিও অত্যন্ত ব্যায়বহুল।
যুক্তরাষ্ট্রের ২০১২ সালের কৃষি পরিসংখ্যান অনুসারে ফার্ম মালিকদের গড় হার অনুযায়ী প্রতিটি ফার্মের বয়স ৫৮ বছর করে। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে কৃষকের সংখ্যা কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। ওই পরিসংখ্যানে আরো দেখানো হয় কৃষি খামারের সংখ্যা কমেছে ৪ শতাংশ। খামারের আকার বেড়েছ ৩.৮ শতাংশ।
আমরা এন্ড্রিউকে ডনেলসন শহরে সেদিন পাওয়ার কারন সে ওখানে অস্ত্র রাখা বিষয়ক একটি প্রশিক্ষন ক্লাসে অংশ নিতে এসেছিল। শহর অঞ্চলেরও বহু মানুষ এই উন্মুক্ত অস্ত্র রাখার ক্লাস করে। তারা যেনো পিস্তল বহন করতে পারে সেই অনুমতি পাওয়ার জন্য এই প্রশিক্ষন নিতে হয়। তবে এন্ড্রিউ জানায় পিস্তলে তার কোনো আগ্রহ নেই। সে একজন শিকারী এবং সে তার শিকারের কাজে লাগে এমন রাইফেল বা শর্টগান রাখতে চায়। হরিণ হাস এবং টার্কি শিকার করা তার শখ।
এন্ড্রিউ এবং তার মতো এই এলাকার অনেক তরুণ যুবকের রাজনীতি পছন্দ নয়। সাত বছর ধরে সে ভোট দেয়ার জন্য উপযুক্ত হয়েছে। ২০১২ এবং ২০১৬ সালে সে ভোট দিতে পারতো কিন্তু দেয়নি।
“আমি আশা করি বায়ু ও জ্বালানী বানিজ্য চলবে এবং ট্রাম্প তা পছন্দ করবে”।
এন্ড্রিউ টার্বাইন ব্লেড তৈরীর সময় তাতে কোনো দোষ ত্রুটি থাকে কি না তা পরীক্ষা করার কাজ করে।
আইওয়া হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ উইন্ড পাওয়ার ষ্টেটগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান। রাজ্যের মোট বিদ্যুতের তিনভাগ উৎপাদিত হয় বায়ু টার্বাইন থেকে। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন ঐতিহ্যবাহী জৈব জ্বালানীর পক্ষে, তার ভয় এতে করে এই শিল্পের ওপর কোনো প্রভাব পড়ে কিনা।